শিলিগুড়ি সংলগ্ন ডাবগ্রাম ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠাকুরনগরের ভবেশ মোড় এলাকার সরস্বতী পুজোয় অঞ্জলি দিতে গিয়ে শাড়িতে আগুন লেগে এক খুদের মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি ঠাকুরনগরের ভবেশ মোড়ের বাসিন্দা বিশ্বনাথ ও বীণা সরকারের একমাত্র আদরের মেয়ে বর্ণালী। গত বছর সরস্বতী পুজোয় হাতে খড়ি হয়েছিল তার। তারপর পাড়ারই কিশলয় নামে একটি প্রাথমিক স্কুলে নার্সারিতে ভরতি হয় সে। সরস্বতী পুজোয় মেয়ের শাড়ি পড়ার বায়না মেটাতে ৬০০ টাকা দিয়ে হলুদ রঙের লাল পাড়ের শাড়ি ও পরচুলা কিনে এনেছিলেন বিশ্বনাথবাবু। সেই শাড়ি পরেই ছোট্ট বর্ণালী বুধবার মণ্ডপে অঞ্জলিও দিয়েছিল সকলের সঙ্গে। দুপুরে মা চলে এসেছিলেন বাড়িতে। ঠাকুরমা গিয়েছিলেন পড়শির বাড়িতে।
মণ্ডপে খেলতে খেলতে হঠাৎই প্রতিমার সামনে থেকে বই সরানোর কথা মনে পড়ে তার। আর সেই বই সরাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। জ্বলন্ত প্রদীপের আগুনে ঝলসে যায় একরত্তি মেয়ে বর্ণালী। সম্ভবত ভয়ে সে শাড়িতে আগুন ধরেছে দেখেও চিৎকার করতে পারেনি। ঠাকুরমা মণ্ডপে ফিরে নাতনিকে ওই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে ওঠেন। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ বর্ণালীকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল নিয়ে গেলে হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট না থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পরিবারের লোকজন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে ওই শিশুকে নিয়ে দু’তিনটে নার্সিংহোমে ভরতির চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও নার্সিংহোমেই ছুটির দিন চিকিৎসক না থাকায় ভরতি করানো যায়নি। শেষে বিকেল নাগাদ বর্ণালীকে মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয়। সেখানেই রাত দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয় তার। এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে শিশুর পরিবার ও স্থানীয়দের মধ্যে।