এই কী সংস্কৃতি? রবিন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বসন্ত উৎসবে কিছু তরুণ তরুণীদের কার্যকলাপ সামনে আসতে এই প্রশ্নই উঠছে বাংলার সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক মহলে। কিন্তু ঠিক কি নিয়ে এত সমালোচনার ঝড়? রবিন্দ্রভারতীর বিটি রোড ক্যাম্পাসের বসন্ত উৎসবে সামিল হয়েছিল এই শিক্ষানিকেতনের বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ারা। মেয়েরা হলুদ শারিতে ও ছেলেরা পাঞ্জাবিতে সাবেকি বাংলা পোষাকে মেতেছে নাচে গানে। কারো খোঁপায় গোঁজা নানা রঙের ফুল কারোর কানে গলায় নানা অলংকারের বাহার। অন্যদিকে মাইকে বাজছে বসন্ত ঋতু নিয়ে তৈরি কবিগুরুর প্রকৃতি পর্যায়ের সব গান। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল, কিন্তু ছন্দপতন একদল কদল তরুণ-তরুণীর উচ্ছৃঙ্খলতায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সদ্য ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, চারজন তরুণী পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের পিঠে আবির দিয়ে লেখা ইউটিউবার রোদ্দুর রায়ের বিকৃত রবীন্দ্রসংগীত ‘চাঁদ উঠেছিল গগনে’। এছাড়াও আরেকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছে, কয়েকজন তরুণী পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের পিঠে আবির দিয়ে লেখা বসন্ত এসে গেছে। ওই তরুণীর দিকে পিছন ফিরে বসে রয়েছে তিন যুবক। তাদেরও বুকে লেখা গালিগালাজ। আর এই ছবি ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড় বইছে চারদিকে। প্রাক্তনিরা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, এটি আধুনিকতার নামে অভব্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বসন্তোৎসবের মতো একটি অনুষ্ঠানে কীভাবে এমন অশ্লীল কাজ করতে পারল ওই তরুণ-তরুণীরা, বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
যদিও এই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদমাধ্যম। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ছবিতে প্রচুর কারিকুরি করা হয়। অনেক সময় কেবলমাত্র নেটদুনিয়ায় খোরাক বানানোর জন্য ছবি সুপার ইম্পোজও করা হয়। এই ছবিটি ওইভাবে বানানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। রবীন্দ্রভারতীর বসন্তোৎসবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি বহিরাগতরাও থাকে। সেক্ষেত্রে ছবিতে যাদের দেখা গিয়েছে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নাকি বহিরাগত তা খতিয়ে দেখতে হবে।” তবে কারন যাই হোক না কেন, এই ঘটনায় যে বাংলা সংস্কৃতি কালিমালিপ্ত হল তা বলা বাহুল্য।