সিঁথি থানায় প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় মূল প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান বদল ঘিরে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এক প্রোমোটারের অভিযোগের ভিত্তিতে সিঁথি থানায় দামী কল, কলের পাইপ, মার্বেল ও অন্যান্য সামগ্রী চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়। চুরির অভিযোগে থানায় ডেকে নিয়ে আসা হয় আসুরা বিবিকে। তাঁকে জেরা করেই চুরির জিনিস উদ্ধারের জন্য পুলিশ রাজকুমার সাউকে থানায় নিয়ে আসে। জেরার সময় রাজকুমারের মৃত্যু হয়।
ঘটনার দিন থানা থেকে বের হওয়ার পর হঠাৎই ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান আসুরা বিবি। গোয়েন্দারা হাড়োয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁর সন্ধান পান। বুধবার বেশি রাতে তাঁকে প্রথমে টালা থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তাঁকে নাইট শেল্টারে, যেখানে তিনি থাকেন, সেখানে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশ তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। রাতেই তিনি পুলিশের কাছে দেওয়া একটি জেনারেল ডায়েরিতে বলেন, রাজকুমার সাউয়ের ছেলেরা তাঁকে মারধরের হুমকি দিয়েছিলেন। সেই ভয়েই তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে গা-ঢাকা দেন। এবার পুলিশ রাজকুমারের পরিবারের লোক, বিশেষ করে তাঁদের ছেলেদের কাছে জানতে চাইছে, কেন ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছিল? জানাযায়, অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলার গোপন জবানবন্দি নিতে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই সিঁথি থানায় যান। থানারই একটি ঘরে বিচারক প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আসুরা বিবির গোপন জবানবন্দি নেন। এদিন লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয় মৃত রাজকুমার সাউয়ের পরিবারের চারজনকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রাজকুমারের ভাই রাকেশ সাউ, যিনি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগকারী ও আরও তিনজন। তাঁদের বক্তব্য নেওয়া হয়। শুক্রবার ফের দু’জনের বক্তব্য নেওয়া হবে। তবে যে ঘরটিতে রাজকুমারকে জেরা করা হয়েছে, তাতে কোনও সিসিটিভি নেই। ফলে বেশ কিছু তথ্যের জন্য এখন আসুরার উপরই নির্ভরশীল গোয়েন্দারা। যদিও পুরো বিষয়টির বড় প্রমাণ মিলবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে। তাই এই রিপোর্টের উপরই নির্ভর করে রয়েছেন তাঁরা।