এই করেছ ভালো নিঠুরো হে… তরুন মজুমদারের দাদার কীর্তি ছবিতে কেদারের গান গাওয়ার সেই দৃশ্য দেখে চোখের জল ফেলেননি, এমন বাঙালি দর্শকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। সেই শুরু। এর পর ‘পরাবত প্রিয়া’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘বলিদান’, ‘ব্যাবধান’ ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’-এর মতো একের পর এক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। নিজের অজান্তেই চন্দনগরের তাপস পাল হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির প্রিয় সাহেব। সেলুলয়েডের মতোই বর্ণময় ছিল তার বাস্তব জীবনও। টলিউডের পাশাপাশি রাজনীতিতেও তাপস রাজ করেছেন স্বমহিমায়।
তবে সফলতার সঙ্গে বিতর্কও পিছু নিয়েছে সমানতালে। রোজভ্যালি ও বেফাঁস মন্তব্যের জেরে রাতারাতি নায়ক থেকে খলনায়কের তকমা জুটিয়েছিল উত্তমোত্তর বাংলা সিনেমার অন্যতম সুপারস্টারের কপালে। ভুবনেশ্বরে সিবিআই হেফাজতে থাকার সময় থেকেই ভাঙতে শুরু করে শরীর। শেষ পর্যন্ত ৬১ বছর বয়সে শেষ হল সাহেবের জীবনযুদ্ধ। বুধবার রবীন্দ্রসদনের মূল ভবনে মড়দেহ শায়ীত থাকা কালীন শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেনের মতো তাবড় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব থেকে শুরু করে শঙ্কর চক্রবর্তী, ভরত কল, হরনাথ চক্রবর্তীর প্রমূখ টলি তারকারা। তাপস পালকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারকে সররাসরি আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘তাপস দিনের পর দিন গঞ্জণার শীকার হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জন্য।’ এরপর রবীন্দ্রসদন থেকে টেকনিশিয়ান স্ট্যুডিয়োতে নিয়ে যাওয়া হয় দেহ। সেখান থেকে কেওড়াতলা মহাশ্মশান। পুর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাপস পালের শেষকৃত্ত্ব সম্পন্ন
হওয়ার সঙ্গেই অবসান হল বাংলা সিনেমার এক অধ্যায়ের।