চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনা ভাইরাস,এখন তার প্রভাব বিস্তার করেছে সমগ্র বিশ্বের দেশজুড়ে। আর যা থেকে ব্যতিক্রম হয়নি আমদের দেশ ও রাজ্যেগুলির ক্ষেত্রেও। একের পর এক মানব জীবন কেড়ে নিচ্ছে এই মারন ভাইরাস। যার আতঙ্কে এখন থর থর কম্পমান সমগ্র দেশবাসি থেকে শুরু করে আমাদের এই রাজ্যের মানুষও।
মানুষের মনে আতঙ্ক এতটায় বেড়ে গিয়েছে যে, কিছু শ্রেনীর মানুষের মনে এই করোনা নিয়ে কিছু অবৈজ্ঞানিক যুক্তিকে তারা অবলম্বন করছেন। করোনায় মৃত রোগীর দেহ বৈদ্যুতিক চুল্লিতে পোড়ালেও নাকি আশেপাশের বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে কালান্তক মারণ ভাইরাস। এই যুক্তিতে, রাজ্যে করোনায় মৃত প্রথম রোগীর শেষকৃত্য নিমতলা শ্মশানঘাটে করতে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পরে কলকাতা পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘন্টা তিনেক বাদে দাহ করা হয়েছিল মৃতদেহটি। তাই এই ধরনের অশান্তিকে রুখতে বড়মাপের সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা । এবার থেকে করোনায় আক্রান্ত কোনও রোগীর মৃত্যু হলে ধাপায় দাহ ও পূর্ব কলকাতার বাগমারি কবরস্থানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ধাপায় পুরসভার জঞ্জালের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যেখানে দাবিহীন দেহ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় দাহ করা হয় সেখানেই করোনায় ফের মারা গেলে শেষকৃত্যের ব্যবস্থা হচ্ছে।
আর বাগমারির কবরস্থানের ভিতরেই আলাদা জায়গা ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মৃতকে সেখানে সমাধিস্থ করা হবে বলে মেয়র জানিয়েছেন। আর মৃতদেহ মাটির নিচে গেলে যে ভাইরাসটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে তার প্রমাণ, চিন বা ইরানে করোনায় গণকবর দেওয়া হয়েছে। বুধবার এপ্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ইলেকট্রিক চুল্লিতে দেহ দাহ হলে করোনা কেন, অন্য কোনও জীবাণু থাকে না। আবার মাটির নিচে কোনও দেহ চলে গেলে সেখানেও সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন পুরসভা মানছে।’
পুরসভা সূত্রে খবর, ৬৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় কলকাতার সমস্ত শ্মশানেই দাহ হয়ে থাকে। যেখানে মাত্র ৫২ ডিগ্রি উঠলেই করোনা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। মেয়র জানান, বাংলা বা দেশে করোনায় আর কোনও মৃত্যু হোক আমরা চাই না। তবুও পরবর্তীতে ফের এমন অশান্তি যাতে না হয় সেটা রুখতেই করোনায় আক্রান্ত কোনও রোগীর মৃত্যু হলে ধাপায় দাহ ও পূর্ব কলকাতার বাগমারি কবরস্থানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।