মালদা, সরকারি আবাস যোজনায় ব্যাপক দুর্নীতি এবং অযোগ্য ব্যক্তিদের এই প্রকল্প সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদা শহরের বৃন্দাবন মাঠ সংলগ্ন গান্ধী মূর্তির সামনে থেকে শুরু হয় যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই সরকারি প্রকল্পের আবেদনকারী বাসিন্দাদের বিক্ষোভ মিছিল। পরে মিছিলটি এসে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে শেষ হয়। সেখানেই সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানসহ একাংশ পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়া এবং দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান কয়েকশো গ্রামবাসী।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ , ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সরকারিভাবে ওই প্রকল্পের ঘর পালিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত থেকে তদারকি করা হয়েছিল। চলতি বছর এই প্রকল্পের ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা একেবারেই অযোগ্য। যাদের পাকা একতলা ও দোতলা বাড়ি রয়েছে, তাদের নাম এই তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ যারা প্রকৃত গরিব মানুষ, যাদের বাড়িঘর নেই । তারা নাম বাদ পড়েছে। এই ঘটনার পিছনে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যরা জড়িত রয়েছে। কাঠমানি নিয়ে এই ধরনের কাজ করেছে যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। পরে জেলাশাসকের দপ্তরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারক পত্র দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে এর আগেও সরকারি প্রকল্পের ঘর তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এবার বিক্ষোভ প্রতিবাদে নামলেন যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক বাসিন্দারা।
এদিন যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিক্ষোভকারী বাসিন্দা গোপাল সাহানি , মমতা মণ্ডল , সামন্ত ঘোষের বক্তব্য, গ্রামের প্রকৃত গরিব মানুষেরা সরকারি প্রকল্পের ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । অথচ যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে , তাদের নাম তালিকায় তোলা হয়েছে। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৩৬০ গরিব মানুষের বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তদারকি করে এবং নাম সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে প্রকাশিত তালিকায় ৭০ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সিংহভাগ মানুষেরই পাকা বাড়ি রয়েছে। তাতে মনে করা হচ্ছে এই ঘটনার পিছনে বড় ধরনের দুর্নীতি করা হয়েছে । কাঠমানি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সহ কয়েকজন মেম্বার এই কাজ করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন জেলাশাসকের দপ্তরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে।
যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সাজ্জাদ আলী জানিয়েছেন , এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সরকারি নিয়ম মেনেই ওই প্রকল্পের প্রকৃত গরিব মানুষদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে । সঠিক সময়ে উপভোক্তারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করার সুযোগ পাবেন।