ডায়মন্ড হারবারের ঘটনা নিয়ে এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আগুন নিয়ে খেলবেন না।’’ শুধু তাই নয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে কটাক্ষ করায় মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও দাবি করেন তিনি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক কর্তব্য পালন না করলে তাঁর দায়িত্ব শুরু হবে, এমনটাও ঘোষণা করেন।
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা তৃণমূলের লোকজনের হামলার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান রাজ্যপাল। সেই মতো সন্ধ্যা ৬টায় রাজভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র।
কিন্তু মুখ্যসচিব এবং ডিজি ডায়মন্ড হারবারের ঘটনা নিয়ে তাঁকে কোনও তথ্যই দেননি বলে অভিযোগ করেন ধনখড়। সেই নিয়ে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেওয়ার পর শুক্রবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি থেকে দুর্নীতি, সব কিছুতেই রাজ্য সরকারের প্রশ্রয় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডায়মন্ড হারবারের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘মানবাধিকার দিবসে এটা কী ঘটল রাজ্যে! বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশে এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এই ঘটনা সংবিধানের পক্ষে অবমাননাকর। ডায়মন্ড হারবারের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে।’’
মেয়ো রোডের সভা থেকে গতকাল ‘চড্ডা, নড্ডা, ফড্ডা, ভড্ডা’ বলে বিজেপি সভাপতিকে কটাক্ষ করেন মমতা। তা নিয়ে তো বটেই বিজেপি নেতৃত্বকে বহিরাগত বলা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘একজন দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী কী করে এমন ভাষা প্রয়োগ করেন ভারতীয়দেরই বহিরাগত বলছেন। বারবার সতর্ক করেছি ওঁকে। দয়া করে আগুন নিয়ে খেলবেন না। ভারত এক দেশ। এখানে সব নাগরিক সমান। আপনি সংবিধানচ্যুত হলে আমার দায়িত্ব শুরু হবে।’’
ডায়মন্ড হারবারের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে রিপোর্ট দিয়েছেন এবং এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে বরদাস্ত করবেন না বলেও জানান রাজ্যপাল।