মালদা:-মরা মহানন্দা নদী ভরাট নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক। প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল।একে অপরের প্রতি অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং জেলা পরিষদের সদস্য। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপিও। মালদা জেলা চাঁচল শহরের অন্যতম সমস্যা হলো মরা মহানন্দা নদী ভরাট হয়ে যাওয়া। ফলে সমস্যা হচ্ছে চাঁচল এলাকার জল নিকাশি ব্যবস্থায়। অল্প বৃষ্টিতে জলমগ্ন হচ্ছে চাঁচল। নদীতে জমেছে আবর্জনা। সেই জায়গা ভরাট করে তৈরি হয়েছে বিল্ডিং। আর যা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। মরা মহানন্দা নদীর সমস্যা নিয়ে কিছুদিন আগে সরব হন চাঁচল ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতেশ পান্ডে। এই নিয়ে তিনি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।সঙ্গে সমগ্র চাঁচলের জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন। আর তারপরেই প্রকাশ্যে আছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।অমিতেশ পান্ডে নাম না করে অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৃণমূল নেতা সামিউল ইসলামের দিকে। সামিউল ইসলাম নিজেকে মিনি এমএলএ বলে দাবি করছেন এই নিয়ে সামিউলকে কটাক্ষ করেন অমিতেশ পান্ডে।সঙ্গে তিনি বলেন মরা মহানন্দা পরিষ্কারের জন্য যা করতে হয় করা হবে। যারা এই নদী ভরাটের জন্য দোষী ওনার অভিযোগের পর তাদের রাতের ঘুম চলে গেছে। এমনটাই দাবি অমিতেশ পান্ডের।অপরদিকে অমিতেশ পান্ডের নাম না করে পাল্টা আক্রমণ করেন জেলা পরিষদের সদস্য সামিউল ইসলাম। দাবি আমি প্রথম এই মরা মহানন্দা পরিষ্কারের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আমার এই পদক্ষেপ অনেকের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
অমিতেশ পান্ডে বলেন,” মিনি এমএলএ বলে কোন সাংবিধানিক পদ হয় না। যিনি নিজেকে মিনি এমএলএ বলে দাবি করছেন আমার অভিযোগের পর তার হয়তো রাতের ঘুম চলে গেছে। তাই এসব ভুলভাল বলছেন। বা এটা টাকা তোলার কোন নতুন ধান্দা। কে কোথায় টাকা নেই সব জানা আছে। ঘরের নাম করে টাকা নিয়ে কার নামে চাঁচল থানায় অভিযোগ রয়েছে সেটাও জানা আছে। এই ভাবে নাম না করে তিনি তীব্র আক্রমণ করেন সামিউল ইসলামকে।” এদিকে চাঁচল শিবপদ লাইব্রেরির জায়গায় বেশকিছু দোকান ভাড়া রয়েছে। সেই দোকানগুলি উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছেন সামিউল ইসলাম। অমিতেশ পান্ডে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছেন সাহস থাকলে উঠিয়ে দেখাক। আইন আইনের পথে চলবে।
এই প্রসঙ্গে সামিউল ইসলাম বলেন,” চাঁচলের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের লোক আমাকে মিনি এমএলএ বলেন। মরা মহানন্দা নিয়ে আমি এবং আমাদের কিছু নেতৃত্ব প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। তাতে অনেকের রাতের ঘুম উড়ে গেছে। কোন পান্ডে ফান্ডে কি সব অভিযোগ করলো তাতে যায় আসে না। এই ভাবেই তিনি আক্রমণ করেন অমিতেশ পান্ডেকে।”সঙ্গে তিনি আরোও বলেন,” চাঁচল কে সাজাতে এবং দূষণমুক্ত করতে যা যা করার করব। মরা মহানন্দা নদী পরিষ্কার হবে। সরকারি জায়গা যেগুলো বেআইনি ভাবে জবর দখল করে রাখা হয়েছে, সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হবে। আমরা মমতা ব্যানার্জির আদর্শে চলি। এটা কারোর বাবার দল নয়।”
এদিকে দুই তৃণমূল নেতার বাকবিতণ্ডা কে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন,” মরা মহানন্দা নদী নিয়ে যেটা নাটক চলছে সেটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কে বড় নেতা এটাই জাহির করার চেষ্টা চলছে। নদী সংস্কারের কোন কাজ হচ্ছে না। যেটা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ব্যর্থতা। আর রইল জমি জবর দখলের কথা। জেলা পরিষদের সদস্য নিজেই এনজিওর নামে জমি দখল করে রেখেছেন। তৃণমূলের মদতে চাঁচলের বিভিন্ন জায়গায় জমি দখল হয়েছে।”
কিছুদিন আগেই ভোট পর্ব মিটেছে। চাঁচলে প্রথম বারের মতো জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তারপরেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতেশ পাণ্ডে এবং জেলা পরিষদ সদস্য সামিউল ইসলাম দুজনেই এলাকায় দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচিত। এই দুই নেতার বাকবিতণ্ডা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
More Stories
চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঝড়বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি-সহ চলবে দক্ষিণবঙ্গে
আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের প্রত্যেকটা জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
আবহাওয়ার বিরাট ভোলবদল