April 19, 2024

TV Bangla New Agency

Just another WordPress site

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার ভবানীপুর গ্রামের দুর্গাপুজো

নিজস্ব সংবাদদাতা পূর্ব মেদিনীপুর:- কথিত আছে আগে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের ভবানীপুর গ্রামে নদী ছিল। আর নদী পাড় লাগোয়া জায়গা হিঙ্গুল বন ছিল। প্রায় ৫০০ বছর আগে এই নদীতে একটি জাহাজ এসে ভবানীপুরে নোঙর করে। জাহাজের সদস্যরা যখন তামাক খাচ্ছিল, সেই সময় একজন ১০-১২ বছরের এক কিশোরী মেয়ে এসে তামাক চায়। জাহাজে যারা ছিল তারা ঐ কিশোরীকে জাহাজে উঠে আসতে বলে। কিন্তু ঐ কিশোরীর নিষেধ করে জানায় জাহাজে উঠলে বিপদ আছে। কিন্তু জাহাজে যারা ছিল তারা হাসাহাসি করে এবং কিশোরীকে জাহাজে উঠে আসতে বলে। আর ঐ কিশোরী জাহাজে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজটি মাটিতে বসে যায়। জাহাজের মাস্তুলে মা অবস্থান করে।বর্তমানে সেই ঝিংলেশ্বরী মন্দির জাহাজের মাস্তুলের উপর বিরাজমান। কথিত আছে স্থানীয় পতি বংশের এক সদস্যকে মা স্বপ্নাদেশ দেয় হিঙ্গল বনে মা রয়েছে এবং মন্দিরের সামনে একটি পুকুর রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ঐ পুকুর থেকে কাঁসার বাসন পত্র উঠবে তাতে করে বিশেষ ভোগ দিয়ে মাকে পূজা করতে হবে। তারপর থেকে পতি বংশ মায়ের পূজো করে আসছিল।তখন মায়ের নাম ছিল মা হিংলেশ্বরী। পরে নাম পরিবর্তিত হয়ে মা ঝিংলেশ্বরী হয়। কিন্তু পতি বংশের এক সদস্য ঐ কাঁসার বাসন চুরি করে নেয়। মা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিশাপ দেয় পতি বংশে আর কোনো পুত্র সন্তান হবেনা। পতি বংশের শেষ সদস্যা ভীমা দেবী ও ফুলেশ্বরী দেবী মায়ের পূজো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উত্থাসিনী ও মিশ্র পরিবারকে পূজোর দায়িত্ব দিয়ে যায়। দুই পরিবারের সদস্যরা কিছুদিন পূজো চালানোর পর প্রায় ১৫০ বছর আগে মহিষাদলের রাজা দেবপ্রসাদ গর্গ মায়ের নামে কয়েক একর জায়গা লিখে দেয়। তবে দেবপ্রসাদ গর্গের নির্দেশ ছিল মা সারা বছর তারা রুপে পূজিত হলেও মায়ের দুর্গা পূজা করতে হবে ও বাসুদেবের শিলা থাকায় জন্মাষ্ঠমী ও পালন করতে হবে। আর তার পর থেকেই দূর্গা পূজোর সময় উগ্র তারা মূর্তির সামনে দূর্গা মায়ের ঘট করে পূজোর প্রচলন শুরু হয়। তখন থেকে পূজোর পাঁচটা দিন দূর্গা পূজোর নিয়ম নীতিই মানা হয়। এমনকি নব পত্রিকা থেকে অষ্ঠমীর পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধি পূজো হয়ে আসছে। আর একটি নিয়ম কথিত রয়েছে মায়ের নির্দেশ ভবানীপুর গ্রামে কখনও দূর্গা ও কালী প্রতিমা করে পূজো করা যাবেনা। তাই শুধুই ভবানীপুর নয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন এখানে পূজো ও মায়ের ভোগ পাওয়ার জন্য।