April 25, 2024

TV Bangla New Agency

Just another WordPress site

করোনার দাপটে থমকে রয়েছে পুজোপার্বণ, মন্দির চত্বরে দেখা নেই মানুষের

মালদা : করোনার দাপটে চারমাসের বেশি সময় ধরে থমকে রয়েছে পুজোপার্বণ৷ শ্রাবণ মাসেও বন্ধ কয়েকশো বছরের প্রাচীন বামনগোলা ব্লকের শিবডাঙ্গি তিলভাণ্ডেশ্বর শিবমন্দির৷ প্রতি বছর শ্রাবণ মাস জুড়ে এই মন্দিরে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড় জমে৷ মন্দিরে থাকা শিবলিঙ্গে জল ঢালতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সবার মধ্যে৷ পুজোকে কেন্দ্র করে মন্দির চত্বরে বসে বিশাল মেলা৷ এক মাস ধরে কয়েক মাসের রসদ সংগ্রহ করে অনেক মানুষ৷ কিন্তু এবার করোনার জন্য সব বন্ধ৷ শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারও মন্দির চত্বরে হাতে গোনা মানুষ৷ সেখানে দেখা যায়নি কোনও দোকানপাট৷

জেলার ইতিহাস বলছে, পাল আমলের কোনও এক রাজা ভীমপাল বামনগোলা ব্লকের শেষ প্রান্তে শিবডাঙ্গি নামে একটি জায়গায় এক শিবমন্দির নির্মাণ করেন৷ কালের নিয়মে সেই মন্দির এই ইতিহাস৷ মূল মন্দির এখন প্রাচীন এক বটগাছের শিকড়ে সমাহিত৷ সেই গাছের শিকড়ের মধ্যেই মহাদেবের বর্তমান অবস্থান৷ বিশাল শিবলিঙ্গ ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন মন্দির৷ পুরোটাই বটগাছের ভিতরে৷ বিশাল বটবৃক্ষের ঝুড়ি মন্দিরের চারপাশে মাটিতে গ্রোথিত৷ যা মন্দিরকে দিয়েছে প্রাকৃতিক স্থাপত্য৷ কয়েকশো বছর ধরে প্রতি শ্রাবণ মাসে মন্দিরে শিবের পুজো দিতে ভিড় করে রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের অগণিত ভক্ত৷ পুজো উপলক্ষ্যে বসে মেলা৷ রাত গড়িয়ে পরদিন ভোর পর্যন্ত চলে৷ কিন্তু এবার সব ফাঁকা৷ শ্রাবণের জলমাখা হাওয়া মাঝেমধ্যে মন্দির চত্বর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে৷ 
আজ সেখানে পুজো দিতে আসা একাধিক ভক্ত জানান, করোনা পরিস্থিতির জন্য মন্দির কমিটিকে এমন সিদ্ধান্ত নিতেই হত৷ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক কাজ করা হয়েছে৷ এখন সবার প্রথম কাজ, যেভাবেই হোক, করোনা সংক্রমণ আটকানো৷ তাই ভক্তরা মন্দিরের বাইরে জল ঢেলেই নিজেদের সমর্পণ করেছেন শিবের কাছে৷ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন, যেন দ্রুত করোনামুক্ত হয় পৃথিবী৷ যেন আগামী বছর ফের তাঁরা মন্দিরে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে পারেন৷ 
সংক্রমণের ভয়ে এখন মন্দির চত্বরে কোনও দোকান বসতে দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ৷ ফলে স্থানীয় একশ্রেণির মানুষের উপার্জন প্রায় বন্ধ৷ মন্দির থেকে অনেকটা দূরে, রাস্তার ধারে দোকান দিয়েছেন তাঁরা৷ নালাগোলার এক মেলা ব্যবসায়ী বলেন, প্রতি বছর গোটা শ্রাবণ মাস মন্দির চত্বরে দোকান করেছি৷ কয়েক হাজার মানুষ আসত৷ ভালো রোজগার হত৷ কিন্তু এবার সব শেষ৷ একে ভক্তরা কম আসছে, অন্যদিকে রাস্তায় কেউ দাঁড়াতে চায় না৷ পেট চালানোই এখন সমস্যার৷